বর্তমানে অন্যান্য জিনিসের মত ঔষধও ঘরে বসেই অনলাইনে অর্ডার করা যায় এবং হাতের কাছে পাওয়া যায়। ইমার্জেন্সি পিলও অনলাইনে পাওয়া যায়। অনেক অনুমোদিত অনলাইন ফার্মেসি ও স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্ম এই সেবা দিয়ে থাকে। তবে অনলাইনে কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যখন ফার্মেসি থেকে কোন ঔষধ কিনি তখন তা ভালো করে দেখেশুনেই ক্রয় করি। অনলাইন থেকে ক্রয় করলে এত বিস্তারিত দেখা সম্ভব হয় না।
তাই ইমার্জেন্সি পিল অনলাইনে পাওয়া গেলেও ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক নিয়ম মেনে কেনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু এই পিল জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয় সেহেতু কোথা থেকে সহজে পাবেন তা আগেই জেনে রাখা ভালো। কারণ আপনারা জানেন যে ইমার্জেন্সি পিল যত তাড়াতাড়ি খাওয়া হবে এর কার্যকারিতা ততই বৃদ্ধি পাবে। তাহলে চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে আসা যাক।
আরও পড়ুনঃ কত দিন পর ইমার্জেন্সি পিল কাজ করে?
ইমার্জেন্সি পিল অনলাইনে পাওয়া যায়?
হ্যাঁ, এটি বর্তমানে অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে, তবে সব প্লাটফর্মে পাবেন না বা কেনা উচিত নয়। শুধুমাত্র নিবন্ধিত ফার্মেসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা বিশ্বস্ত স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্ম থেকেই এই ওষুধ কেনা উচিত। বাস্তবে ঔষধ কেনার সময় আমরা অনেক কিছুই দেখে কিনি, কিন্তু অনলাইনে এত কিছু দেখা যায় না। তাই বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম থেকে কেনার পাশাপাশি ডেলিভারি পাবার পর চেক করে নিতে হবে।
অনেকেই অনলাইন থেকে ঔষধ কেনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তাঁরা ভাবেন যে এভাবে ঔষধ কিনলে তা আসল নাও হতে পারে। এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না কারণ বাজারে নকল ঔষধের অভাব নেই। আর তা যদি হয় ইমার্জেন্সি পিলের মত কোন জরুরি ঔষধ। এক্ষেত্রে নকল ঔষধ খাওয়া হলে তা গর্ভধারণে বাঁধা দিবেই না, বরং অন্যান্য শারীরিক ক্ষতিও হতে পারে।
অনলাইন থেকে ইমার্জেন্সি পিল কেনার সুবিধাঃ
অনলাইন থেকে ইমার্জেন্সি পিল কেনার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এসব সুবিধা নিঃসন্দেহে আপনাকে অনলাইনে ক্রয় করার আগ্রহ বাড়াবে। কী কী সুবিধা থাকছে দেখে নিনঃ
- ব্যক্তিগত বিষয়গুলি অন্য কারো নজরের সামনে আসে না।
- এটি সময় বাঁচায়, তাই ফার্মেসি ঘুরে পিল খুঁজে বের করার ঝামেলা নেই।
- ব্যবহারকারী বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে তুলনা করে সেরা পছন্দ করতে পারে।
- স্থানীয় দোকানে সব ব্র্যান্ড নাও পাওয়া যেতে পারে যেটা আপনি অনলাইন থেকে খুঁজে পাবেন।
- সরাসরি বাড়িতে পৌঁছে যায়, বিশেষ করে দূরবর্তী বা ব্যস্ত এলাকার জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।
- অনলাইনে অন্যান্য ব্যবহারকারীর রিভিউ দেখে পণ্যের কার্যকারিতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা যায়।
অনলাইন থেকে ইমার্জেন্সি পিল কেনার অসুবিধাঃ
অনলাইনে কেনাকাটা সহজ হলেও, ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে যাচাই না করে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা বিক্রেতার ওপর নির্ভর করা ততটা সুবিধাজনক নাও হতে পারে। কিছু প্রধান সমস্যা হলোঃ
- অনলাইনে অনেক অনির্ভরযোগ্য বিক্রেতা ভেজাল বা নকল ওষুধ বিক্রি করে।
- এসব পিল দেখতে আসল মনে হলেও প্রয়োজনীয় উপাদান নাও থাকতে পারে, ফলে তা কার্যকর হয় না এবং গর্ভনিরোধের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যায়।
- কিছু অসাধু বিক্রেতা মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া ওষুধ বিক্রি করে, যা কোনো ফল দেয় না।
- নকল পিলে উপাদানের সঠিক মাত্রা না থাকার কারণে তা কেবল অকার্যকর নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
- অনলাইনে কেনাকাটার সময় প্রয়োজনীয় ডাক্তারি বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ সহজে পাওয়া যায় না।
অনলাইনে ইমার্জেন্সি পিল কেনার সময় কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
শুধুমাত্র পরিচিত, লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং বিশ্বাসযোগ্য অনলাইন ফার্মেসি বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ওয়েবসাইট থেকে ইমার্জেন্সি পিল কিনুন। অজানা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কেনা এড়িয়ে চলুন। একটি নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে সাধারণত প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা, যোগাযোগের নম্বর এবং লাইসেন্স নম্বর স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে।
অর্ডার করার আগে পণ্যের নাম, ব্র্যান্ড, মেয়াদ এবং প্যাকেজিং ভালোভাবে যাচাই করুন। আসল প্যাকেটে সাধারণত ব্যাচ নম্বর এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য স্পষ্টভাবে লেখা থাকে। যদি কোনো ওয়েবসাইটে দাম অস্বাভাবিকভাবে কম থাকে, তবে সতর্ক হোন; এটি নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ইঙ্গিত হতে পারে।পণ্য হাতে পাওয়ার পর প্যাকেজিং ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। দেখুন প্যাকেজিং অক্ষত আছে কি না।
FAQs
অনলাইনে ইমার্জেন্সি পিল কেনা নিরাপদ কি?
হ্যাঁ, অনলাইন থেকে ইমার্জেন্সি পিল কেনা নিরাপদ হতে পারে যদি আপনি সঠিক প্লাটফর্ম থেকে কিনেন। আপনি যদি অজানা কোন ওয়েবসাইট থেকে জরুরি এই ঔষধটি কিনেন তাহলে ঝুঁকির সম্ভাবনা মেনে নিয়েই আপনাকে কিনতে হবে। আর যেকোনো প্লাটফর্ম বিশ্বস্ত হয়ও না। তাই যদি আপনি এর আগে অনলাইন থেকে কোন ঔষধ ক্রয় করে না থাকেন তাহলে কারো থেকে পরামর্শ নিতে পারেন যে অনলাইনে কেনার জন্য কোন প্লাটফর্ম ভালো হবে। ভালো ও বিশ্বস্ত মাধ্যম থেকে ক্রয় করলে আপনি নিশ্চিন্তে ইমার্জেন্সি পিল গ্রহণ করতে পারবেন এবং এটি শতভাগ নিরাপদও।
ইমার্জেন্সি পিল অনলাইনে কিনতে হলে কি প্রেসক্রিপশন প্রয়োজন হয়?
সাধারণত ইমার্জেন্সি পিল কিনতে কোন প্রেসক্রিপশন লাগে না। তাই আপনি যখন অনলাইন থেকে কিনবেন তখনও প্রেসক্রিপশন এর প্রয়োজন নেই। তবে নিজের ইচ্ছামত পিল খাওয়া উচিত নয়। প্রেসক্রিপশন না লাগলেও অন্তত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পিলটি খাওয়া উচিত। আগে অবশ্যই একজন গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যে আপনার শরীরের ধরন অনুযায়ী কোন ইমার্জেন্সি পিলটি গ্রহণ করা উচিত। তবে কেনার সময় এই প্রেসক্রিপশন কাওকে দেখাতে হয় না।
ইমার্জেন্সি পিল অনলাইনে কিনতে গেলে কীভাবে আসল-নকল যাচাই করা যায়?
অনলাইনে ইমার্জেন্সি পিল কেনার সময় সতর্কতা অবলম্বন করলে আসল এবং নকল পিল আলাদা করা সম্ভব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং বিশ্বস্ত ফার্মেসি বা স্বাস্থ্যসেবা ওয়েবসাইট থেকে কেনা। অজানা সোশ্যাল মিডিয়া বা ব্যক্তিগত বিক্রেতা থেকে কেনা এড়িয়ে চলা উচিত। প্যাকেজিং ভালোভাবে পরীক্ষা করা জরুরি। এছাড়া অস্বাভাবিকভাবে কম দাম বা অতিরিক্ত ছাড় থাকলে সতর্ক থাকা দরকার, কারণ এটি নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের লক্ষণ হতে পারে। ওয়েবসাইটে প্রদত্ত ব্র্যান্ড ও পণ্যের নাম অফিসিয়াল সূত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা উচিত।