ফ্যাসিড ক্রিম একটি অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম, যার প্রধান উপাদান হলো ফিউসিডিক অ্যাসিড। এটি ত্বকের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ এবং এর ফলে সৃষ্ট প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। আপনার দেওয়া প্রতিটি পয়েন্টই ফ্যাসিড ক্রিমের কাজের আওতায় পড়ে।
ফ্যাসিড ক্রিম মূলত ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে এবং তাদের ধ্বংস করে কাজ করে। এটি প্রধানত স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস সহ বিভিন্ন সংবেদনশীল ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর। এই পোষ্টে আমরা ফ্যাসিড ক্রিম এর কাজ কি, ফ্যাসিড ক্রিম এর ব্যবহার সহ ফ্যাসিড ক্রিম সম্পর্কিত আরো আলোচনা করবো। তাই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
ফ্যাসিড ক্রিম এর কাজ কি
ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে চিকিৎসকেরা ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দেন। কিন্তু অনেকেই ফ্যাসিড ক্রিম এর কাজ কি সে সম্পর্কে জানেন না। ফ্যাসিড ক্রিম ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। ফ্যাসিড ক্রিম ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ দূর করতে অত্যন্ত কার্য করে।
ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারিত হয়। ফ্যাসিড ক্রিম এর কাজ অনেক। নিচে ফ্যাসিড ক্রিম এর কাজ কি সে সম্পর্কে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হলঃ
- ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ দূর করে
- ত্বকের লালচে ভাব ও প্রদাহ কমায়
- সংক্রমনের কারণে হওয়া ফোসকা শুকায়
- ক্ষতস্থান নিরাময় করে
- ফোড়া ও ঘায়ের জীবাণু ধ্বংস করে
- একজিমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়
- ত্বকের কাটাছেঁড়া ও সংক্রমণ প্রতিরোধী
- ইনফেক্টেড চুলকানি দূর করে
- ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল ফোলা ভাব কমায়
১. ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ দূর করে: ফ্যাসিড ক্রিমের মূল কাজই হলো ত্বকে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণকে কার্যকরভাবে দমন করা। এটি ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, ফলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং তারা মারা যায়।
২. ত্বকের লালচে ভাব ও প্রদাহ কমায়: ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ফলে ত্বকে প্রায়শই লালচে ভাব, ফোলা এবং প্রদাহ দেখা দেয়। ফ্যাসিড ক্রিম সংক্রমণকে দূর করার মাধ্যমে এই প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়াগুলো কমাতে সাহায্য করে, ফলে ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
৩. সংক্রমণের কারণে হওয়া ফোসকা শুকায়: ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, যেমন ইমপেটিগো (Impetigo), ত্বকে ছোট ছোট ফোসকা বা পুঁজভরা দানা তৈরি করতে পারে। ফ্যাসিড ক্রিম ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার রোধ করে এবং সংক্রমণ শুকিয়ে এই ফোসকাগুলোকে শুকাতে সাহায্য করে।
৪. ক্ষতস্থান নিরাময় করে: যদি কোনো ক্ষতস্থানে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হয়ে থাকে, তাহলে সেটি নিরাময় হতে দেরি হয়। ফ্যাসিড ক্রিম সেই সংক্রমণের চিকিৎসা করে ক্ষতস্থানকে পরিষ্কার করে এবং দ্রুত নিরাময়ে সহায়তা করে।
৫. ফোড়া ও ঘায়ের জীবাণু ধ্বংস করে: ফোড়া এবং ঘা সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণেই হয়। ফ্যাসিড ক্রিম ফোড়া ও ঘায়ের গভীরে থাকা জীবাণুগুলোকে ধ্বংস করে, যা তাদের দ্রুত শুকাতে ও নিরাময় হতে সাহায্য করে।
৬. একজিমার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়: একজিমা (Eczema) একটি প্রদাহজনক ত্বকের অবস্থা, যা প্রায়শই শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত হয়। একজিমার ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় (যেমন, স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস)। যখন একজিমা সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন ফ্যাসিড ক্রিম সেই সংক্রমণ দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এটি একজিমার মূল চিকিৎসা নয়, বরং সংক্রমণের চিকিৎসা।
৭. ত্বকের কাটাছেঁড়া ও সংক্রমণ প্রতিরোধী: ছোটখাটো কাটাছেঁড়া, আঁচড় বা আঘাতের স্থানে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ফ্যাসিড ক্রিম এমন স্থানে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে বা প্রাথমিক সংক্রমণকে দমন করে।
৮. ইনফেক্টেড চুলকানি দূর করে: ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে ত্বকে তীব্র চুলকানি হতে পারে। ফ্যাসিড ক্রিম সংক্রমণ দূর করার মাধ্যমে চুলকানি উপশম করে।
৯. ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল ফোলা ভাব কমায়: ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ত্বকে যে ফোলা বা ইডিমা (edema) দেখা যায়, ফ্যাসিড ক্রিম সেই সংক্রমণকে নির্মূল করে ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম
ফ্যাসিড ক্রিম একটি অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম, যার প্রধান উপাদান হলো ফিউসিডিক অ্যাসিড। এটি ত্বকের ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এর সঠিক ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভুলভাবে ব্যবহার করলে সংক্রমণের উন্নতি না-ও হতে পারে বা ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে পারে।
ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ এবং পণ্যের প্যাকেজিং-এর নির্দেশিকা মেনে চলা উচিত। তবে, এর সাধারণ ব্যবহারের নিয়মাবলী নিচে দেওয়া হলো:
হাত পরিষ্কার করা: ক্রিম লাগানোর আগে আপনার হাত ভালোভাবে সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এতে ত্বকে অন্য কোনো জীবাণু ছড়ানো রোধ হবে।
আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার করা: ক্রিম লাগানোর আগে আক্রান্ত স্থানটি পরিষ্কার পানি দিয়ে আলতো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। প্রয়োজন হলে একটি পরিষ্কার গজ বা কাপড় ব্যবহার করে আলতো করে চাপ দিয়ে শুকিয়ে নিন।
ক্রিম প্রয়োগ: আপনার আঙুলের ডগায় সামান্য পরিমাণ ফ্যাসিড ক্রিম নিন। সাধারণত, একটি পাতলা স্তর তৈরি করার জন্য খুব অল্প পরিমাণ ক্রিমই যথেষ্ট। আক্রান্ত ত্বকের ওপর পাতলা করে এবং আলতোভাবে ক্রিমটি লাগান। ক্রিমটি ভালোভাবে ত্বকের সাথে মিশে গেছে কিনা, তা নিশ্চিত করুন। বেশি করে ক্রিম লাগানোর প্রয়োজন নেই, কারণ এতে কার্যকারিতা বাড়ে না, বরং অপচয় হয়।
ডোজ ও ব্যবহারের সময়কাল: সাধারণত, চিকিৎসক আক্রান্ত স্থানে দিনে ২ থেকে ৩ বার ক্রিমটি লাগানোর পরামর্শ দেন। কতদিন ব্যবহার করবেন: ফ্যাসিড ক্রিম সাধারণত ৭ থেকে ১৪ দিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সংক্রমণের ধরন এবং তীব্রতার উপর ভিত্তি করে এই সময়কাল ভিন্ন হতে পারে।
আপনার চিকিৎসক যে সময়কাল নির্ধারণ করে দেবেন, সেই সম্পূর্ণ কোর্সটি শেষ করা অত্যন্ত জরুরি, এমনকি যদি সংক্রমণের লক্ষণগুলো আগেই চলে যায়। কোর্স অসমাপ্ত রাখলে সংক্রমণ ফিরে আসতে পারে এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে পারে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসা কঠিন করে তুলবে।
হাত পুনরায় পরিষ্কার করা: ক্রিম লাগানোর পর আপনার হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিন, বিশেষ করে যদি আপনি অন্য কোনো কাজ করেন বা চোখে হাত দেন।
ফ্যাসিড ক্রিম শুধুমাত্র ত্বকের বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য, এটি মুখে খাওয়া যাবে না বা চোখ, নাক, মুখ বা অন্যান্য সংবেদনশীল ঝিল্লিতে লাগানো যাবে না। ভুলবশত চোখে চলে গেলে প্রচুর পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন। এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক, তাই চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করবেন না।
নিজে নিজে রোগ নির্ণয় করে বা অন্য কারো পরামর্শে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি আপনি একই স্থানে অন্য কোনো ক্রিম বা মলম ব্যবহার করেন, তবে ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের আগে বা পরে পর্যাপ্ত সময় (কমপক্ষে ৩০ মিনিট) ব্যবধান রাখুন।
এই নিয়মাবলী মেনে চললে ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার ত্বকের সংক্রমণ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারবেন।
জেনে নিনঃ Zimax 500 এর কাজ কি – জিম্যাক্স ৫০০ খাওয়ার নিয়ম
ফ্যাসিড ক্রিম এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই ক্রিম এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো সাধারণত হালকা হয় এবং ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করে দিলে বা শরীর অভ্যস্ত হয়ে গেলে চলে যায়। এগুলো প্রায়শই দেখা যায় এবং সাধারণত তেমন গুরুতর হয় না:
- ত্বকে জ্বালাপোড়া বা জ্বালা করা
- ত্বকে চুলকানি
- ত্বক লালচে হওয়া
- ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া
- ত্বকে র্যাশ বা ফুসকুড়ি
ফ্যাসিড ক্রিম একটি অ্যান্টিবায়োটিক, এবং এটি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক সময়কালের জন্য এটি ব্যবহার করুন। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বা আপনার মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
ফ্যাসিড ক্রিম এর দাম কত
বাংলাদেশে ফ্যাসিড ক্রিম এর দাম সাধারণত তার ধরন (যেমন শুধু ফ্যাসিড ক্রিম নাকি ফ্যাসিড এইচসি, ফ্যাসিড বিটি) এবং টিউবের ওজনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তবে একটি ধারণা দেওয়ার জন্য কিছু সাধারণ মূল্য নিচে দেওয়া হলো:
Product Name | Composition | Size | Price (BDT) | Discounted Price (BDT) |
---|---|---|---|---|
Facid Cream 2% | Sodium Fusidate BP | 15 gm tube | 90.00 | 85.00 – 86.00 |
Facid HC Cream | Fusidic Acid + Hydrocortisone Acetate | 10 gm tube | 125.00 | 118.00 – 119.00 |
Facid BT Cream | Fusidic acid + Betamethasone | 10 gm tube | 170.00 | – |
এই মূল্যগুলো মার্কেট রিটেইল প্রাইস (MRP) বা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য। বিভিন্ন ফার্মেসি বা অনলাইন স্টোরে ডিসকাউন্টের কারণে দাম সামান্য কমবেশি হতে পারে। দাম যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। ফ্যাসিড ক্রিম একটি অ্যান্টিবায়োটিক। এটি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা উচিত নয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ধরনের ফ্যাসিড ক্রিম এবং সঠিক ডোজ ব্যবহার করা জরুরি।
এই গ্রুপের বিকল্প কিছু ওষুধের নাম জেনে নিন
Brand Name | Strength | Company | Pack Size & Price (BDT) |
---|---|---|---|
Fucidin | 2% | Leo Pharmaceuticals Ltd. | 15 gm tube: ৳650.00 |
Fusidate | 2% | Aristopharma Ltd. | 20 gm tube: ৳85.00 |
Facid | 2% | Eskayef Pharmaceuticals Ltd. | 15 gm tube: ৳90.00 |
Fusate | 2% | Amulet Pharmaceuticals Ltd. | 20 gm tube: ৳80.24 |
ফ্যাসিড ক্রিম এর সতর্কতা
ফ্যাসিড ক্রিম এর সঠিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
১. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার নয়: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা। ফ্যাসিড ক্রিম একটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ। নিজে নিজে রোগ নির্ণয় করে বা অন্যের পরামর্শে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকই আপনার ত্বকের অবস্থা দেখে এটি আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা, তা নির্ধারণ করতে পারবেন। ভুল বা অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার ব্যাকটেরিয়ায় অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসা কঠিন করে তুলবে।
২. নির্দেশিত কোর্স সম্পন্ন করা: আপনার চিকিৎসক যে সময়কাল (সাধারণত ৭-১৪ দিন) নির্ধারণ করে দেবেন, সেই সম্পূর্ণ কোর্সটি শেষ করা বাধ্যতামূলক, এমনকি যদি সংক্রমণের লক্ষণগুলো আগেই চলে যায়। কোর্স অসমাপ্ত রাখলে সংক্রমণের সম্পূর্ণ নিরাময় নাও হতে পারে এবং এটি আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে।
৩. শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহার: ফ্যাসিড ক্রিম ত্বকের বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি মুখে খাওয়া যাবে না। চোখ, নাক, মুখ বা অন্যান্য সংবেদনশীল ঝিল্লিতে (যেমন যৌনাঙ্গে) ক্রিম লাগানো যাবে না। ভুলবশত এসব স্থানে লেগে গেলে প্রচুর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যদি জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি persists করে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া: কিছু ব্যক্তির ফিউসিডিক অ্যাসিডের প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। যদি ক্রিম ব্যবহারের পর ত্বকে তীব্র ফুসকুড়ি, আমবাত (hives), তীব্র চুলকানি, লালচে ভাব, শ্বাসকষ্ট, মুখ, ঠোঁট বা গলায় ফোলাভাব দেখা যায়, তাহলে দ্রুত ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করুন এবং জরুরি চিকিৎসা সহায়তা নিন।
৫. পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: ক্রিম লাগানোর পর কিছু সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যেমন – ত্বকে হালকা জ্বালাপোড়া, শুষ্কতা, চুলকানি বা লালচে ভাব। এগুলো সাধারণত হালকা হয় এবং সময়ের সাথে সাথে কমে যায়। তবে, যদি এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো গুরুতর হয়, অসহনীয় হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
৬. অন্যান্য ত্বকের ঔষধের সাথে ব্যবহার: যদি আপনি একই স্থানে অন্য কোনো টপিকাল (ত্বকে প্রয়োগযোগ্য) ক্রিম, মলম বা লোশন ব্যবহার করেন, তাহলে ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের আগে বা পরে পর্যাপ্ত সময় (কমপক্ষে ৩০ মিনিট) ব্যবধান রাখুন। এতে ঔষধের কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি কমে।
৭. গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদান: গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে ফ্যাসিড ক্রিম ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদিও ত্বকে প্রয়োগকৃত অ্যান্টিবায়োটিকের সিস্টেমিক শোষণ সাধারণত কম হয়, তবুও ঝুঁকি এড়ানোর জন্য চিকিৎসকের নির্দেশনা অপরিহার্য।
এই সতর্কতাগুলো মেনে চললে ফ্যাসিড ক্রিমের নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে।
ফ্যাসিড বিটি ক্রিম এর কাজ কি
ফ্যাসিড বিটি ক্রিম হলো দুটি সক্রিয় উপাদানের সংমিশ্রণ:
- ফিউসিডিক অ্যাসিড: এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি বন্ধ করে ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণকে দমন করে।
- বেটামেথাসন ভ্যালেরেট: এটি একটি শক্তিশালী কর্টিকোস্টেরয়েড। এর প্রধান কাজ হলো প্রদাহ (লালচে ভাব, ফোলা), চুলকানি এবং অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া কমানো।
এটি এমন ত্বকের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যেখানে প্রদাহ (যেমন একজিমা, ডার্মাটাইটিস) এবং একই সাথে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ বিদ্যমান। এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করার পাশাপাশি ত্বকের লালচে ভাব, ফোলা এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
ফ্যাসিড বিটি ক্রিম এর ব্যবহার
ফ্যাসিড বিটি ক্রিমে দুটি সক্রিয় উপাদান আছে: ফিউসিডিক অ্যাসিড (অ্যান্টিবায়োটিক) এবং বেটামেথাসন ভ্যালেরেট (শক্তিশালী স্টেরয়েড)।
এটি মূলত ত্বকের এমন সংক্রমণ এবং প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যেখানে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এবং একই সাথে তীব্র প্রদাহ (যেমন লালচে ভাব, ফোলা, চুলকানি) বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, এটি তীব্র একজিমা বা ডার্মাটাইটিস যা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে, তার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে এবং স্টেরয়েড প্রদাহ ও চুলকানি কমায়।
ফ্যাসিড এইচ সি ক্রিম এর কাজ কি
ফ্যাসিড এইচ সি ক্রিমও দুটি সক্রিয় উপাদানের সংমিশ্রণ:
- ফিউসিডিক অ্যাসিড: এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক যা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে ত্বকের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণকে দমন করে।
- হাইড্রোকর্টিসোন অ্যাসিটেট: এটি একটি কম শক্তিশালী কর্টিকোস্টেরয়েড (বেটামেথাসনের চেয়ে)। এর প্রধান কাজ হলো ত্বকের প্রদাহ, চুলকানি এবং লালচে ভাব কমানো।
এটি এমন ত্বকের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যেখানে প্রদাহ (যেমন হালকা থেকে মাঝারি একজিমা বা ডার্মাটাইটিস) এবং একই সাথে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ বিদ্যমান। ফিউসিডিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে এবং হাইড্রোকর্টিসোন প্রদাহ ও চুলকানি কমায়। এটি সাধারণত মুখ বা সংবেদনশীল ত্বকে ব্যবহারের জন্য বেশি উপযোগী হতে পারে কারণ এর স্টেরয়েড উপাদান তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী।
ফ্যাসিড এইচ সি ক্রিম এর ব্যবহার
ফ্যাসিড এইচ সি ক্রিমেও দুটি সক্রিয় উপাদান আছে: ফিউসিডিক অ্যাসিড (অ্যান্টিবায়োটিক) এবং হাইড্রোকর্টিসোন অ্যাসিটেট (কম শক্তিশালী স্টেরয়েড)।
এটি এমন ত্বকের রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যেখানে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এবং একই সাথে হালকা থেকে মাঝারি প্রদাহ বিদ্যমান। এটি হালকা একজিমা বা ডার্মাটাইটিস যা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে, তার জন্য উপযোগী। হাইড্রোকর্টিসোন তুলনামূলকভাবে কম শক্তিশালী হওয়ায় এটি মুখ বা শিশুদের ত্বকের মতো সংবেদনশীল অংশে ব্যবহারের জন্য বেশি উপযুক্ত হতে পারে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
উভয় ক্রিমই অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্টেরয়েডের সংমিশ্রণ। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এগুলো ব্যবহার করা উচিত নয়। সঠিক রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত ক্রিমের ডোজ ও সময়কাল নির্ধারণের জন্য চিকিৎসকের নির্দেশনা অপরিহার্য।
শেষ মতামত
ফ্যাসিড ক্রিম একটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনার রোগের সঠিক কারণ নির্ণয় এবং ঔষধের সঠিক ব্যবহার নির্ধারণের জন্য একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের নির্দেশনা অপরিহার্য। তাই, এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এটি কার্যকর ফলাফল তখনই দিবে যখন আপনি সঠিক ডোজ এবং সঠিক ব্যবহার করবেন।